বিশ্ব সেরা ১০ স্থাপত্য।

বিশ্ব সেরা ১০ স্থাপত্য।

পড়তে সময় লাগবে: 5 মিনিট...

ঠিক কবে থেকে মানুষ পৃথিবী নামক এই ছোট্ট গ্রহে বসবাস শুরু করেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। সময়ের রকম ফেরে মানুষের সৃষ্ট বিভিন্ন স্থাপনা হয়ে উঠেছে রহস্যময়। নিজের সৃষ্টিকে নিজেই অবাক হয়ে দেখেছে মানুষ। কিন্তু হাজার হাজার বছর আগে আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া কী করে মানুষ এমন সমস্ত ভাস্কর্য বা স্থাপনা তৈরি করেছিল তা আজও বিস্ময় জাগায় মনে। আর যেখানে বিস্ময়, যেখানে মুগ্ধতা, যেখানে ভাবনার সীমাবদ্ধতা সেখানেই তো রহস্য। এমন কিছু রহস্যময় স্থাপনাকে নিয়েই আজকের এই আয়োজন।

১। চীনের মহাপ্রাচীরঃ

চীনের প্রাচীর (গ্রেট ওয়াল অব চায়না) খুব ছোট বেলা থেকেই শুনে আসা একটা নাম। এটি পৃথিবীর সবচাইতে জনবহুল দেশ চীনে অবস্থিত। পৃথিবীর এই আশ্চর্য ও দীর্ঘতম প্রাচীর এর দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৬৯৫ কিলোমিটার এবং উচ্চতা ৪.৫৭ থেকে ৯.২ মিটার বা প্রায় ১৫ থেকে ৩০ ফুট। চওড়ায় প্রায় ৯.৭৫ মিটার বা ৩২ ফুট। এটি পৃথিবীর সপ্তাশ্চার্যগুলোর মধ্যে একটি। চীনের মহাপ্রাচীর নিয়ে কিছু গল্প প্রচলিত আছে। চাঁদ দেখা দেখা একমাত্র পৃথিবীর স্থাপনা নাকি এটা। এর উপর দিয়ে নাকি এক সাথে ১২ জোড়া ঘোড়া একসাথে চলতে পারতো।

২। মিশরের পিরামিড

পৃথিবীর সব রহস্য বিজ্ঞানের কাছে এসে ধরা দেয়নি। মিশরের পিরামিড মনে হয় এমনই এক রহস্য। এর কাঠামো আধুনিক বিজ্ঞানের সব শাখাতেই খুব গুরুত্বপূর্ণ । সব চেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে আর্কিটেকচারাল হিসেবে এ ধরনের কাঠামো সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রতিরোধক এবং স্থায়ী হয়ে থাকে। বিশাল সব পাথর কি করে শত শত ফুট উপরে তোলা হয়েছিল জানে না কেউ। কেউ বলতে পারে না কি করে কাটা হয়েছিল পাথর গুলি। কারণ পাথরগুলি এত মসৃণ যে অতি উন্নত যন্ত্র ছাড়া যেটা একেবারেই সম্ভব নয়। এছাড়াও মৃতদেহকে সংরক্ষণের জন্য তাঁরা বিশেষ ধরণের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করত। পুরো ব্যাপারটা আজও আধুনিক বিজ্ঞানের কাছে এক ধোঁয়াশা।

৩। বুর্জ খলিফা, সংযুক্ত আরব আমিরাত

এই মুহূর্তে পৃথিবীর সব চেয়ে উঁচু অট্টালিকা হচ্ছে বুর্জ খলিফা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত দৈত্যাকার এই ইমারত। কি নেই এই ভবনে ? এ যেন পৃথিবীর সব আরাম আয়েশের মিলন মেলা। এই দালানের উচ্চতা প্রায় ৮১৮ মিটার । এই চমৎকার ভবনটির নির্মাণ কাজ ২০০৯ সালে সম্পন্ন হয় এবং ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়। দুবাই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের পর এই বুর্জ খলিফা নির্মিত হয় এবং ভবনটির কাজ শেষ হওয়ার পর স্থাপত্যের ক্ষেত্রে মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের একটি বিশাল অর্জন অর্জিত হয়। এটি নিঃসন্দেহে আরব আমিরাতের সবচেয়ে দর্শনীয় এবং আকর্ষণীয় স্থান। তবে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় স্থান হলো এই ভবনের ১২৪ তলার উপরে প্রকৃতি দর্শনের জন্য পর্যবেক্ষণ ডেকটি। এখান থেকে পুরো দুবাই দেখা যায়।

৪ । পেট্রোনাস টাওয়ার, মালয়েশিয়া

সুদূর মালয়েশিয়া গেলে মনে হয় এমন কেউ নেই যে এই বিল্ডিং এর বিশালতা দেখতে যায় না। উচ্চতারদিক থেকে বর্তমান বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়ার টুইন টাওয়ার বা পেট্রোনাস টাওয়ার। তবে ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ টাওয়ারটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার ছিল। ৮৮ তলাবিশিষ্ট পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারটির অবস্থান মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কেন্দ্রস্থলে। এ টাওয়ারটি তৈরি করতে সময় লেগেছে একটানা সাত বছর। মালয়েশিয়ার মোবাইল কোম্পানি মাক্সিস ও তেল কোম্পানি পেট্রোনাসের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে এই টাওয়ার।

৫। পিসার লিনিং টাওয়ার, ইতালি

এটা হেলানো টাওয়ার নামেও পরিচিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ভবনগুলোর মধ্যে একটি। পিসার লিনিং টাওয়ার ইতালির পিসা শহরের ক্যাথিড্রাল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত একটি হেলানো টাওয়ার। এই টাওয়ারের নির্মাণ কাজ ১৩৭২ সালে সম্পন্ন করা হয়েছিলো এবং নির্মাণের সময় এই বিখ্যাত টাওয়ারের একপাশ নরম ভিত্তির কারণে ক্রমশ হেলতে থাকে। বর্তমানে এ অবকাঠামোটিকে রক্ষা করতে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এটির হেলে পড়া রোধ এবং ভূপাতিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। এই লিনিং টাওয়ারের সামনে ছবি তোলা পর্যটকদের খুবই প্রিয়।

৬। আগ্রার তাজমহল

কিছু কিছু ছবি নিদর্শন দেখলে মনের অকপটে ভেসে উঠে আরেকটি কল্পনা। যেমন আগ্রার তাজমহল এর কথা মনে হলেই মনে পরে যায় ভালোবাসার কথা। মনে হবেই না কেন , এ যেন ভালবাসারই এক শাশ্বত রূপ। স্ত্রী মমতাজ মহলের অকাল মৃত্যুতে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের দিলে খুব আঘাত লাগে। সেই ভেঙ্গে পড়া দিল নিয়ে তিনি স্ত্রীর কবরের উপর একটা সমাধিসৌধ নির্মাণ করেন। এটাই তাজমহল।অনেক কথা, অনেক গল্প, কল্পনা সম্ভার লুকিয়ে আছে এই তাজমহলকে ঘিরে।

৭। ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান

এই উদ্যান নিয়ে সব চেয়ে মজার তথ্যটি হচ্ছে আজ পর্যন্ত এই উদ্যানটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এটি থাকার কিছু পৌরাণিক প্রমাণ পাওয়া যায় মাত্র। বড় সবুজ পাহাড়ের মত দেখতে ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে একটি। এই বাগান সম্পর্কে প্রচুর লেখালেখি করে গেছেন রোমান এবং গ্রিক সাহিত্যিকগণ। তাঁদের থেকেই এই বাগান সম্পর্কে কিছু মজার এবং চমকপ্রদ তথ্য জানা যায়। এই বাগান পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত ছিল ১ হাজার ৫০ জন মালী। ৫ থেকে ৬ হাজার প্রকার ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছিল এই ঝুলন্ত বাগানে। ৫১৪ খ্রিস্টাব্দে পার্শ্ববর্তী রাজ্যের সাথে এক ভয়াবহ যুদ্ধে সম্পূর্ণ রুপে ধ্বংস হয়ে যায় ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান।

৮। আইফেল টাওয়ার

ফ্রান্সের কথা মনে হলেই মনের মধ্যে যে ছবিটি ভেসে উঠে তা হল আইফেল টাওয়ার । মজার ব্যাপার হচ্ছে ফরাসীরা শুরুতে মোটেও এই স্থাপনা স্থাপনের পক্ষপাতি ছিল না, বরং ঘোর বিরোধিতা করেছে। ফ্রান্সের প্যারিস শহরে নির্মিত আইফেল টাওয়ারটি পৃথিবীর স্থাপনা নির্মাণের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। এর ওজন দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার টন এবং উচ্চতা ৯৮৪.২৫ ফুট।

৯।আর্টিমিসের মন্দির


এটা ডায়নার মন্দির নামেও ডাকা হয়। এটা গ্রিক মন্দির এবং তা নির্মাণ করা হয়েছিল খ্রীস্টপূর্ব ৫৫০ অব্দে। এথেন্স ও রোমের লোকেরা বিভিন্ন দেবদেবির পূজা করতো এখানে। ৩৫৬ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে এই মন্দিরটি ধ্বংস হয়ে যায়।

১০। নিউগ্রেজ


এটা অবস্থিত আয়ারল্যান্ডে। এটি UFO আকৃতির স্থাপনা এবং বিশাল এর আকার। এতে রয়েছে বিশাল দরজা। এর ভিতরে আছে অনেক গুলো রুম যার দেওয়ালে অনেক খোদাই নকশা।

 63 total views,  1 views today

Share your vote!


Related Posts

To Buy Prohori

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

© 2024